অনলাইন ডেস্ক
চট্টগ্রামের মীরসরাই থানা পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে টেকনাফের হ্নীলা মরিচ্যাঘোনার সুড়ঙ্গ বাড়ির আলোচিত ইয়াবা ডন ও বিএনপি নেতা ফয়সাল কমলা লেবুর ভেতরে করে অভিনব কায়দায় স্যাম্পল দেখাতে নিয়ে যাওয়ার পথে ইয়াবাসহ আটক হয়েছে।
জানা যায়, গত ২৬নভেম্বর সন্ধ্যার দিকে মীরসরাই থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) দিনেশ চন্দ্র দাস গুপ্ত গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সর্ঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে উপজেলার ফকির হাট এলাকা থেকে হ্নীলা মরিচ্যাঘোনার মৃত ফজল করিমের পুত্র, হ্নীলা ১নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ও ইয়াবা ডন ফয়সাল (৩৬) কে কয়েকটি কমলালেবুসহ আটক করে। পরে উক্ত কমলালেবু খুলে ৩৮০পিস ইয়াবা পাওয়া যায়। ধৃত ফয়সাল জানায়, এই মাদকের চালান স্যাম্পল হিসেবে সে অন্য পার্টনারদের নিকট নিয়ে যাচ্ছিল। এই ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা দায়েরের পর ধৃত মাদক কারবারীকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
মীরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান (পিপিএম) এই অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, চট্টগ্রাম জেলাকে মাদক মুক্ত করতে পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হক (পিপিএম) এর নির্দেশে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১০মার্চ হ্নীলা কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের সহায়তায় টেকনাফ মডেল থানা পুলিশ ইয়াবা ডন ফয়সালের বাড়িতে আইন-শৃংখলা বাহিনীর অভিযানে পালিয়ে যাওয়ার সুড়ঙ্গ পথ আবিস্কার করে পুরো জেলায় হৈ ছৈ ফেলে দেন। আইন-শৃংখলা বাহিনী ফয়সাল সিন্ডিকেটকে আটকের জন্য মরিয়া হয়ে উঠলেও কালো টাকার প্রভাব এবং কতিপয় নারীদের কারণে কৌশলে পার পেয়ে যায়।
বাংলাদেশ-দুবাই ভিত্তিক মাদক কারবারী সিন্ডিকেটের সক্রিয় সদস্য এই ফয়সাল একটি মাদক মামলার আসামী হওয়ার পরও কালো টাকার বিনিময়ে চার্জশীট থেকে বাদ যাওয়ার ঘটনায় জনমনে চরম ক্ষোভের সঞ্চার হয়। এছাড়া চলতি বছরের গত ৭ অক্টোবরে মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনাকারী একটি বাহিনীর হাতে আটক হওয়ার পর মোটাংকের বিনিময়ে পার পেয়ে গেলেও মাদক কারবার বন্ধ করেনি। এই ইয়াবা ডন ও আলোচিত সুড়ঙ্গ বাড়ির চিহ্নিত মাদক কারবারীরা বিশেষ প্রভাবশালী মহলের ইন্ধন ও দূর্নীতিবাজ আইন-শৃংখলা বাহিনীর কতিপয় সদস্যদের সাথে বিবিধ লেন-দেনের মাধ্যমে আতাঁত করে মরিচ্যাঘোনা এলাকাকে প্রকাশ্যে ইয়াবার চালান ক্রয়-বিক্রয়ের আস্তানায় পরিণত করে। মাদক বিক্রয়ে বাঁধা দেওয়ায় ফয়সালের ভাই হাসান স্থানীয় এক ঈমামকে গুলি করে মারার জন্য ধাওয়া করে। প্রাণ ভয়ে উক্ত ঈমাম চাকরী ছেড়ে অন্যত্র পালাতে বাধ্য হয়। এই ঘটনা ফাঁস হলে টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশের হাত থেকে বাঁচতে হাসান আতœগোপনে চলে যায়। এখন সে এলাকায় আবারো ফিরে এসেছে। দুই ভাই মিলে আবারো এই অপতৎপরতা শুরু করে। অবশেষে পার্টনারদের স্যাম্পল দেখাতে গিয়েই পুলিশের হাতে ইয়াবা ডন ফয়সাল আটকের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় লোকজন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে এবং অনেককে মিষ্টি বিতরণ করতে দেখা গেছে।
উপরোক্ত বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোছাইন বলেন, তাকে সভাপতি দেখিয়ে হ্নীলা ১নং ওয়ার্ড কমিটির একটি কমিটি উপজেলায় জমা দেওয়া হয়েছিল কিন্তু মাদক সম্পৃক্ততার কারণে এই কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়নি। তার মতো বিভিন্ন ওয়ার্ড পর্যায়ে মাদক সম্পৃক্তদের শীঘ্রই বাদ দেওয়া হবে।
Leave a Reply