1. akfilmmultimedia@gmail.com : admin2020 :
  2. teknafchannel71@gmail.com : teknaf7120 :
শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:১৬ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
সর্বোচ্চ দামে নিলাম পেলেন টেকনাফ স্থল বন্দরের ব্যবসায়ী ওমর ফারুক সিআইপি টেকনাফে ৭০ হাজার মানুষ বেকার- কর্মহীন : জড়িয়ে পড়ছে অবৈধ কর্মকাণ্ডে টেকনাফের হ্নীলাতে নারীকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন টাকা লুটপাট ও বাড়ি ভাংচুর থানায় অভিযোগ তথ্যপ্রযুক্তি ইন্ডিয়ান সাইবার সিকিউরিটি ফোর্স টিমে যোগ দিলেন সাংবাদিক হাফেজ আহমদ জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোর জন্য সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন টেকনাফে প্রেমিকের সাথে প্রেমিকার পলায়ন হয়রানী মূলক মামলায় গ্রেফতার আতঙ্কে ৫ শিশুর মা! হ্নীলা ইউনিয়ন দক্ষিণ শাখা যুবদলের যুব সমাবেশ অনুষ্টিত টেকনাফে জমি বিরোধের জেরে ফেইসবুক পোস্ট দিয়ে প্রতি পক্ষকে স’ন্ত্রা’সী সাজানোর পাঁয়তারার প্রতিবাদ ও ব্যাখ্যা ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ টেকনাফ উপজেলা দক্ষিণ শাখা’র সদর ইউনিয়ন কমিটি সম্পন্ন। বন্যার্ত ৫’শ পরিবারকে ত্রাণ দিলেন টেকনাফ নয়াপাড়ার নিবন্ধিত রোহিঙ্গারা

দুধের অভাবে অর্ধাহারে শিশুটি! || টেকনাফ একাত্তর

  • আপডেট সময় : বুধবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০২১
  • ২৮০ বার পড়া হয়েছে

আব্দুর রহমান, টেকনাফ থেকে

যে ছোট্ট শিশুটিকে রেখে লাকিংমে চাকমা এই পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়ে গেছে, সেই শিশুটি কোথায় আছে, কেমন আছে- জানতে চাওয়া হয়েছিল আতাউল্লাহর মা ও ভাইয়ের কাছে। সেটা গত বছরের ২৮ ডিসেম্বরের কথা। সেদিন ওই গ্রামে শিক্ষক, সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী ও আদিবাসী নেতাদের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এ প্রতিবেদকেরও যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল।
হয়েছিল আতাউল্লাহর মা ও ভাইয়ের কাছে। সেটা গত বছরের ২৮ ডিসেম্বরের কথা। সেদিন ওই গ্রামে শিক্ষক, সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী ও আদিবাসী নেতাদের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এ প্রতিবেদকেরও যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। আতাউল্লাহর পরিবারের পক্ষে বলা হয়েছিল, বাচ্চাটি আছে উখিয়ায়। মিথ্যা তথ্য দেওয়া হয়েছিল তখন। বাচ্চাটিকে সে সময় রাখা হয়েছিল টেকনাফেরই সাবরাং ইউনিয়নে। লোক মারফত জানা গেল বর্তমানে বাচ্চাটি আতাউল্লাহর বাড়িতেই আছে। পরে সোমবার বিকেলে সেখানে গিয়ে পাওয়া গেল তাকে। জানা গেল, দুধের অভাবে অর্ধাহারে কাটছে শিশুটির। টেকনাফ উপজেলার শিলখালি চাকমাপাড়া থেকে লাকিংমে চাকমা নামের চতুর্দশী এক কিশোরীকে অপহরণের
পর মিথ্যা জন্মসনদ দিয়ে ধর্মান্তর ও বিয়েতে বাধ্য করা হয়। জোরপূর্বক বিয়েতে বাধ্য করার দায়ে অভিযুক্ত আতাউল্লাহ ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে লাকিংমেকে হত্যা কিংবা আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। অপহরণের প্রায় এক বছর পর গত ৯ ডিসেম্বর লাকিংমে চাকমাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে মৃত অবস্থায় পায় তার পরিবার। এরপর টানা ২৬ দিন লাকিংমের বাবা ও আতাউল্লাহর মরদেহ সৎকারের দাবিতে লাশটি পড়ে ছিল কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে। পরে বয়স বিবেচনায় অপ্রাপ্তবয়স্ক বলে প্রমাণিত হওয়ায় লাশ শেষকৃত্যের অধিকার পান লাকিংমের বাবা লালাঅং চাকমা। মৃত্যুর ১৩ দিন আগে লাকিংমে নামের শিশুটি আরেকটি শিশুর জন্ম দিয়ে গেছে।
সোমবার বিকেলে আতাউল্লাহর বাড়ির উঠানে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গেই ভেতর থেকে ছোট্ট শিশুর কাশির শব্দ কানে আসে। সুনসান নীরব এই বাড়ির দরজা তখনও বন্ধ ছিল। কেউ আছেন কিনা জানতে চাইলে ফুটফুটে শিশুটিকে কোলে নিয়ে বেরিয়ে এলেন রহিমা খাতুন। এই রহিমা খাতুনই ২৮ ডিসেম্বর জানিয়েছিলেন, লাকিংমের বাচ্চাটি আছে উখিয়ায়।

কক্সবাজারের টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের ডেইলপাড়া থেকে আধা কিলোমিটার ভেতরে বাড়িটির অবস্থান। টিনের চাল ও বাঁশের বেড়ার ঘর তাদের। রহিমা খাতুন বরাবরের মতো দাবি করলেন, তার ছেলে আতাউল্লাহ কাউকে অপহরণ করেনি। লাকিংমের ইচ্ছায় তার ছেলে বিয়ে করেছে। বিয়ের আগে মেয়েটি মুসলমান হয় এবং তার নাম রাখা হয় হালিমাতুল সাদিয়া। সাদিয়ার মেয়ের নাম রাখা হয় আতিফা খানম। ইপিআই টিকার কার্ড অনুসারে শিশুটির বয়স এক মাস ১৮ দিন। ওই কার্ডেও বাচ্চাটির মায়ের নাম হালিমাতুল সাদিয়া লেখা রয়েছে।
বয়সের ভারে ন্যুব্জ রহিমা। তিনি বলেন, ‘আর কত দিন বেঁচে থাকি জানি না, যত দিন আছি, তত দিন এই বাচ্চা আমার কাছেই থাকবে। আমি ছেলের বউকে হারিয়েছি। তার লাশটা পর্যন্ত দাফন-কাফনের সুযোগ পাই নাই। বেঁচে থাকতে তার বাচ্চাকে কারও হাতে দেব না। প্রয়োজনে তার জন্য যেখানে যুদ্ধ করতে হয়, করব। নিজের কষ্ট হলেও নাতনির যাতে কষ্ট না হয়, সেভাবে লালনপালন করছি।’


রহিমার বর্ণনাতেই বোঝা গেল, বাচ্চাটি খুব ভালো নেই। দুধের অভাব লেগেই আছে। আতাউল্লাহ বাড়িতে নেই। তবে বাচ্চার দেখভালের জন্য বড় ছেলের এক মেয়েকে বাড়িতে এনে রেখেছেন রহিমা। সবকিছু সে দেখাশোনা করছে। বাজার থেকে দুধ কিনে আনার জন্য উঠানের গাছ থেকে নারকেল ও সুপারি বিক্রি করতে হয়েছে তাদের।
রহিমা জানালেন, এই শিশুটিকে অনেকেই দত্তক নিতে চায়। তিনি রাজি হননি। এখন বাচ্চাটির সঙ্গে তার সময় ভালো কাটে। ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে বাচ্চাটি তার সঙ্গেই থাকে। তিনি বলেন, ‘যদি আমি মরেও যাই, এই বাচ্চাকে আমার ছেলেমেয়েরা বড় করবে, সেটা ওদের বলে রেখেছি আগে থেকে। এই বুড়ো বয়সে আমার একটাই স্বপ্ন- নাতনিকে বড় করে ডাক্তার হিসেবে দেখতে চাই আমি।’ রহিমার আক্ষেপ, ‘লাকিংমের পরিবার মেয়ের লাশ পাওয়ার জন্য লড়াই করেছে। বাচ্চাটার কোনো খবর নেয়নি।’
লাকিংমের বড় বোন উকিংমে চাকমা বলেন, ‘বোনের একটা বাচ্চা আছে, সেটি জেনেছি আমরা। বাচ্চাটি কেমন আছে, জানতে চাই। কিন্তু ওই বাড়িতে যাওয়ার সুযোগ নেই। স্বেচ্ছায় দিয়ে দিতে চাইলে বাচ্চাটিকে নেওয়ার ইচ্ছা আছে আমাদের। তবে এ বিষয়ে এখনও পারিবারিক কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।’

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এ জাতীয় আরো খবর