মোহাম্মদ তোফাইল
টেকনাফ সীমান্তের একমাত্র স্থলবন্দরটি বন্ধ থাকায় বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন হাজারোও ব্যবসায়ী ও শ্রমিক। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ-মিয়ানমার বাণিজ্যিক যোগাযোগ বন্ধ থাকায় স্থলবন্দরের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে আমদানিনির্ভর পণ্য ব্যবসায়ীরা পড়েছেন চরম লোকসানে।
টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে মূলত মিয়ানমার থেকে বিভিন্ন পণ্য—তেঁতুল, সুপারি, আদা, রসুন, ডাল, মাছ, কাঠ ও ফল আমদানি হতো। এসব পণ্যের ওপর নির্ভরশীল দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বড় একটি বাজার। কিন্তু বর্তমানে বন্দর বন্ধ থাকায় বিকল্প উৎস থেকে পণ্য আমদানি করতে হচ্ছে যা খরচ বাড়িয়ে দিচ্ছে বহুগুণে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেন,
“গত এক বছর ধরে স্থলবন্দর কার্যত বন্ধ। আমরা অগ্রিম অর্থ দিয়ে এলসি খুলেছিলাম, এখন সেই টাকা আটকে আছে। পণ্য আসছে না, আর বাজারে বিক্রি করেও লোকসান গুনতে হচ্ছে।”
বন্দরের সাথে জড়িত প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। প্রতিদিন যারা পণ্য ওঠানো-নামানোর কাজে নিয়োজিত ছিলেন, তারা এখন জীবিকার সন্ধানে ছুটছেন অন্যত্র।
এক কর্মকর্তা জানান,
“সরকারি উদ্যোগে কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা জরুরি। সীমান্ত বন্ধ থাকলে শুধু ব্যবসা নয়, দুই দেশের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কও বিঘ্নিত হয়।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সীমান্ত উত্তেজনার কারণে এ বন্দর বন্ধ রয়েছে। তবে বাণিজ্যকে রাজনৈতিক সংকট থেকে আলাদা করে দেখার তাগিদ দিয়েছেন তারা।
অপরদিকে, বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই কার্যক্রম পুনরায় চালুর জন্য তারা প্রস্তুত রয়েছে।
টেকনাফ স্থলবন্দর কেবল ব্যবসা-বাণিজ্যের একটি কেন্দ্র নয়, এটি স্থানীয় অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি। এই বন্দর বন্ধ থাকায় শুধু ব্যবসায়ী নয়, সাধারণ শ্রমিকরাও বিপাকে পড়েছেন। এখন সময় এসেছে দ্রুত এবং কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার, যাতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আবার সচল হয় এবং দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে পারে।
Leave a Reply