টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি।
কক্সবাজারের টেকনাফ হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদে ভিডব্লিউবি কার্ড বিতরণে স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে। এদিকে বরাদ্দ অনুযায়ী কার্ড না পাওয়ায় ক্ষোভে কার্ড ছুড়ে পুকুরে ফেললেন ইউপি সদস্য নাসরীন পারভীন।
ইউপি সদস্য নাসরিন পারভীন অভিযোগ করে বলেন, মোহাম্মদ আলী চেয়ারম্যানের পরিবারের নামে ৪০টি ভিডব্লিউবি কার্ড বরাদ্দ রয়েছে। পাল্টা অভিযোগ করে চেয়ারম্যান বলেন, ইউপি সদস্য নাসরিন পারভীনের পরিবারের নামেও ৮টি কার্ড বরাদ্দ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নে পরিষদ ভবনে এ ঘটনা ঘটে। এসময় ইউপি সচিব মোয়াজ্জেম হোসেন ও ইউপি সদস্য নাসরিন পারভীনের মধ্যে বাগবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ইউপি সচিবের কাছে কার্ড বরাদ্দের চেয়ে কম কেন জানতে চাইলে তিনি জানেন না বলে জবাব দেয়। পরে সাধারণ জনগণ কার্ডের জন্য ইউপি সদস্যকে বিরক্ত করলে, ইউপি সদস্য ক্ষোভে কার্ডগুলো ছুড়ে পুকুরে ফেললেন।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য নাসরিন পারভীন বলেন, উনি আমাদের সুপারিশে চেয়ারম্যান হয়েছে। আমাদের সাথে পরামর্শ করে ইউনিয়ন পরিষদের যে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা থাকলেও, এখন পর্যন্ত আমাদের সাথে পরামর্শ করে কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি। সব সিদ্ধান্ত সে নিজের ইচ্ছেমত নেই। পরিষদে কোন প্রকল্প বা কার্ড আসলে, সে আমাদেরকে কিছু বলে না। পরিষদের চৌকিদার বা সচিবের মাধ্যমে আমাদের কাছে পাঠায়। চেয়ারম্যান এত ব্যস্ত মানুষ সে আমাদের সাথে বসতে পারে না। তাই আমি ইউএনও স্যারকে এ বিষয়ে একবার জানিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আমার কার্ড পাওয়ার কথা সংরক্ষিত তিনটি ওয়ার্ড মিলে ৩০০-৩৫০ টি। কিন্তু আমি কার্ড পেয়েছি ২৭০ টি। আমার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কার্ড বরাদ্দ ১০০টি। সেখান থেকে ৬০ টি কার্ড বাদ দেওয়া হয়েছে, রাখছে মাত্র ৪০টি। দলীয়ভাবে সে সবাইকে কার্ড দিছে, কিন্তু আমাদের ইউপি সদস্যের কার্ড কেন বাদ দেওয়া হয়েছে? আগামীকাল আমি কোন কার্ড বিতরণ করতে দিব না। কারণ আমার বাদ দেওয়া কার্ড গুলো ফেরত পেতে হবে। কেন বাদ দেওয়া হয়েছে তার জবাব দিতে হবে চেয়ারম্যানকে। সে এখন পর্যন্ত আমাদের সাথে কোন যোগাযোগ করে নাই। এমনকি আমাদের অন্তর্ভুক্ত ওয়ার্ডে আমি আর রফিক মেম্বারের সাথে যোগাযোগ করার কথা, কিন্তু যোগাযোগ করেনি।
কার্ড ছুড়ে পুকুরে ফেলার বিষয়টি স্বীকার করে নাসরিন পারভীন বলেন, আমি আমার বরাদ্দের কার্ডগুলোও পায়নি, বিতরণের সময়ও ডাকেনি। তাই সাধারণ জনগণের কস্ট সহ্য করতে না পেরে কার্ড ছুড়ে ফেলছি। নিজ নামে কার্ড নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি আর আমার মেয়ের নামে দুইটা কার্ড করছি যা দুজন বিধবা মহিলার জন্য ।
বিষয়টি নিয়ে হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি যার কার্ড তার হাতে হাতে দিচ্ছি। কিন্তু উনার পরিবারের নামে আটটি কার্ড আছে। বিষয়টি নজরে আসলে আমি কার্ড স্থগিত করেছি।
পরিবারের নামে ৪০টি কার্ড থাকার বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরিবার তো দূরের কথা, আমার আত্মীয়-স্বজনের নামেও কোন কার্ড নাই। মূলত সে আজকে যে বিশৃঙ্খলাটা করছে নিজের ইচ্ছে মতো কার্ড না পাওয়ায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, বিষয়টা নিয়ে অবগত হয়েছি। ইতিমধ্যে নাসরিন পারভিনকে শোকজ করা হয়েছে। পরিবারের নামে যে ভিডব্লিউবি কার্ডগুলো আছে প্রথমে সেগুলো সংশোধন করবো। আর যিনি একাজটা করেছে তার বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদের ম্যানুয়াল অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিব।###
সূত্র- দৈনিক ইনকিলাব।
Leave a Reply