নুরুল হোসাইন, টেকনাফ:

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মাসব্যাপী ধারাবাহিক কর্মসূচীর অংশ হিসেবে হোয়াইক্যং ইউনিয়নে আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮ তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে (উখিয়া-টেকনাফের) সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আব্দুর রহমান বদির নিজ অর্থায়নে হোয়াইক্যং ইউপির ৯টি ওয়ার্ডে ৮টি গরু জবাই করে ১১ হাজার মানুষ কে গণভোজ খাওয়ানো সম্পন্ন হয়েছে।

সাবেক সাংসদ,পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব আবদুর রহমান বদির আর্থিক সহযোগিতায় খতমে কুরআন গণভোজ,সাবরাং, সেন্টমার্টিন, বাহারছড়া ও হোয়াইক্যং ইউনিয়নে প্রায় ৩৫ হাজার গণমানুষ সহ নেতা-কর্মীরা গণভোজে অংশগ্রহণ করেছেন।

সোমবার (২১ আগস্ট)-২০২৩ সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত হোয়াইক্যং ইউনিয়নের খারাংখালী বালিকা দাখিল মাদরাসা, নায়া পাড়া দাখিল মাদরাসা ও হোয়াইক্যং আলহাজ্ব আল আছিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে
টেকনাফ উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ ও জাতীয় শ্রমিক লীগের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত শোক দিবসের আলোচনা সভায় উক্ত গণভোজ খাওয়ানো হয়।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, কক্সবাজার-৪
(উখিয়া-টেকনাফের) সাবেক সংসদ সদস্য ও পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুর রহমান বদি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন,

কক্সবাজার জেলা পরিষদের সদস্য আলহাজ্ব জাফর আহমদ, টেকনাফ পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো:আলম বাহাদুর,হোয়াইক্যং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি হারুনর রশিদ সিকদার,ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি শাওন আরমান,উপজেলা সেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি সরওয়ার আলম,উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক নুরুল মোস্তফা,কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক আমান উল্লাহ ও জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শাহজাহান মিয়া মার্শাল।

উপস্থিত ছিলেন,টেকনাফ পৌর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস শুক্কুর,প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নুরুল হোসাইন,সাংবাদিকবৃন্দ সহ স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

এর আগে বঙ্গবন্ধুর আত্মার মাগফিরাত কামনায় কোরআন খতম ও দোয়া মাহফিল শেষে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

সভায় আবদুর রহমান বদি বক্তব্যে বলেন,
(উখিয়া-টেকনাফের) সকল জনগণ আমার স‍্যার, আমি হলাম সেবক এবং শেখ হাসিনার ওয়াফাদার গোলাম। আমি বদি এবার যদি মনোনয়ন পাই আগামী সংসদ নির্বাচনে এই লক্ষী আসনটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দেবো।

তিনি আরো বলেন,উখিয়া-টেকনাফে উন্নয়নের ছোঁয়ায় বদলে গেছে । সারা বাংলাদেশে আলোচিত এক নাম আব্দুর রহমান বদি এমপি। নানা সময় আমাকে নিয়ে হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। আর এসবের মধ্যে আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলাম ২ বার। এর আগে ছিলাম টেকনাফ পৌরসভার মেয়র। বর্তমানে আমার স্ত্রী শাহিন আকতার উখিয়া-টেকনাফ আসনের সংসদ সদস্য।

তিনি আরো বলেন,আমি উখিয়া টেকনাফের সেবক নামের অনেক বড় একজন ভিক্ষুক।জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে ভিক্ষা করে (উখিয়া-টেকনাফের) অসহায় মানুষের জন‍্য বিভিন্ন সুবিধা নিয়ে আসি এবং তাদের খাওয়াই।

সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি আরো বলেন, দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বধীন আ.লীগ সরকার দেশ পরিচালনায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। আমি সংসদ সদস্য হয়ে এলাকার উন্নয়ন মুলক কাজ করে গেছি। প্রতিটি ওয়ার্ডের রাস্তায় ইটের সলিং, প্রাথমিক বিদ্যালয় নতুন ভবন বাউন্ডারি বিদ্যালয়ের ওয়াশ ব্লক, বিশুদ্ধ পানির স্থাপন, নতুন নতুন রাস্তা নির্মান রাস্তা পাকা করণ, ড্রেন নির্মাণ, ই সেবা কেন্দ্রে আধুনিক সরঞ্জাম, ব্রিজ নির্মাণ, আর্সেনিক মুক্ত টিউবয়েল স্থাপনসহ বিভিন্ন উন্নয়ন মুলক কাজ আমার উদ্যোগে হয়েছে।

এলাকায় ব্যাপক উন্নয়নের পাশাপাশি ইউনিয়নের বিভিন্ন মসজিদ, মন্দির, মাদরাসা, ঈদগাহ ও কবর স্থানে ব্যাপক অনুদান প্রদানের মাধ্যমে আমি দুই উপজেলাবাসীর কাছে ইউনিয়নে রুপকার হিসাবে নিজের অবস্থান করে নিয়েছি।

তিনি আরো বলেন, উখিয়া-টেকনাফের মাদকের বদনাম থাকলেও মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত করার প্রতিনিয়ত করে যাচ্ছি এবং প্রতিটি ইউনিয়ন আধুনিক রূপান্তরিত করার জন্য ভবিষ্যতে এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে।

সভাতে বক্তারা বলেন,
এবারের জাতীয় শোক দিবসে নিজস্ব অর্থায়নে উখিয়া টেকনাফ উপজেলার লক্ষাধিক মানুষের জন্য গণভোজ আয়োজন করেছেন আবদুর রহমান বদি। তৎমধ্যে টেকনাফ উপজেলায় ৭০ হাজার এবং উখিয়া উপজেলায় ৩০ হাজার মানুষের জন্য এই কাঙ্গালি ভোজ আয়োজন করেন।

২০০৮ সাল থেকে একাধারে প্রায় ১৫ বছর তার পরিবারেরই দখলে সংসদ সদস্যের পদ রয়েছে। ২০০৮ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত আবদুর রহমান বদি সংসদ সদস্য ছিলেন। দুদকের একটি মামলার সাজা হওয়ায় আইনি জটিলতা ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি সংসদ নির্বাচন প্রার্থী হতে পারেন নাই বদি। তার পরিবর্তে স্ত্রী শাহিন আকতার আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হন। শাহিন আকতার স্বামী আবদুর রহমান বদির ইমেজকে কাজে লাগিয়ে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। উখিয়া টেকনাফের বর্তমান সংসদ সদস্য হলেন আবদুর রহমান বদি স্ত্রী শাহিন আকতার।

এই আয়োজনের জন্য সাবেক সাংসদ আবদুর রহমান বদি ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের দায়িত্বশীলদের মাঝে গরু ও অর্ধশতাধিক ছাগল এবং অর্ধ কোটি নগদ টাকা তুলে দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মার মাগফেরাতের জন্য আয়োজিত ১৪ আগষ্ট থেকে শুরু হওয়া এই কাঙ্গালি ভোজ ৩১ আগষ্ট পর্যন্ত চলবে। উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলা আয়োজিত এবারের কাঙ্গালি ভোজ পুরো জেলায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

উখিয়া উপজেলায় নতুন তিনটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করেছেন। এসকল কারণে, উখিয়া-টেকনাফের লোকজন বলে মহাজোট সরকারের আমলে যে উন্নয়ন বিপ্লব ঘটেছে, তা অন্যকোনো সরকারের আমলে হয়নি। যা সম্ভব হয়েছে এমপি বদির সার্বিক প্রচেষ্টায়। তাই তাকে একজন সফল রাজনীতিক ব্যক্তি ও সফল এমপি বলেই মনে করেন বক্তারা।

বর্তমানে নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে নগদ অর্থ বিতরণ, রাস্তা-ঘাট সংস্কার করার ক্ষেত্রে তিনি সরকারের অনুদানের আশায় বসে না থেকে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে অর্থ দান করে সমস্যার সমাধান করেছেন। এছাড়াও তার নিজস্ব অর্থায়নে উখিয়া-টেকনাফের প্রায় ৫ শতাধিক ছাত্র-ছাত্রীকে লেখাপড়া করাচ্ছেন। যা শিক্ষা প্রসারের ক্ষেত্রে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

রাস্তাঘাট-মসজিদ-মন্দির-মাদ্রাসার উন্নয়নের পাশাপাশি উখিয়া-টেকনাফের মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় হাসপাতালের আসন। বৃদ্ধি, দুই উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন স্থাপন, কক্সবাজার- টেকনাফ সড়কে দৃষ্টি নন্দন ১৫টি ব্রীজ-কালভার্ট নির্মান, অধিকাংশ এলাকায় সাইক্লোন শেল্টার, জেটি নির্মান, প্রত্যেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘূর্নিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবন, উখিয়ায় ৩ টি রাবার ড্যাম নির্মান সহ উন্নয়নের মাইলফলক স্থাপিত হয়েছে।

এছাড়াও টেকনাফ সাবরাংয়ে ট্যুরিস্ট জোন স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে এই জোনের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করা হয়েছে। আর এর জন্য মেরিন ড্রাইভ রোডের নির্মান কাজ প্রায় শেষের পথে।

দুই উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস, উখিয়া ও টেকনাফ কলেজে নতুন ভবন ও অনার্স চালু করা হয়েছে। আর এমপি বদির একান্ত প্রচেষ্টায় সরকারীকরন হয়ে যাচ্ছে উখিয়া বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা কলেজ ও উখিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়।

উখিয়া উপজেলায় নতুন তিনটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। উখিয়া-টেকনাফে এসব কারণে তার নির্বাচনি এলাকার ভোটারদের মন জয় করেছেন তিনি এবং আস্থা অর্জন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।

পরপর দুইবার কক্সবাজার-৪ আসন থেকে নির্বাচিত এই সংসদ সদস্য বেশির ভাগ সময় ব্যয় করেন তার নির্বাচনি এলাকার জনগণের মাঝে।

এছাড়া সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিভিন্ন সময় অসহায় মানুষের মাঝে আর্থিক অনুদান, চাল, কম্বল সহ নানা প্রয়োজনীয় জিনিস বিতরন করে যাচ্ছেন এখনও।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আ. লীগ সরকার দেশকে উন্নয়নের দূর্বার গতিতে এগিয়ে নিচ্ছে। সমগ্র দেশব্যাপী উন্নয়নের অংশ হিসেবে ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী আবদুর রহমান বদি এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর ব্যাপক উন্নয়নের কাজ করেছেন। এ দুই উপজেলায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার দেশ পরিচালনায় আবদুর রহমান বদির হাত ধরে উন্নয়নের ছোঁয়ায় পাল্টে যেতে থাকে সীমান্ত উপজেলা উখিয়া-টেকনাফের চিত্র।

এরপর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারো বিপুল ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আবদুর রহমান বদি। তিনি উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন ইউনিয়নে রাস্তা ঘাট সংস্কার ও নির্মাণ, বিভিন্ন সামাজিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণ, শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ, মসজিদ, মন্দির নির্মাণ ও সংস্কার, স্বাস্থ্য, কৃষি ও মৎস্য খাতে ব্যাপক উন্নয়ন সহ বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজ করে গেছেন। স্বাধীনতা ৪০ বছরে যে উন্নয়ন হয়নি গত ১০ বছরে সেই উন্নয়ন হয়েছে বলে দাবী করেছেন বক্তারা।
অসীম ধৈর্য ও নেতৃত্বের দৃঢ়তার কারণে নিয়মিত ছুটে যান তার নির্বাচনি এলাকা উখিয়া-টেকনাফের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। তিনি সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষসহ সর্বস্তরের নারী- পুরুষের সঙ্গে নিয়মিত সাক্ষাৎ করেন। কার কি সমস্যা তা তিনি ধৈর্য সহকারে শুনেন, তাৎক্ষনিক সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থাও করেন আব্দুর রহমান বদি এমপি।